৪.ভাগবতের আলোকে মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য -পর্ব ০৪ ভাগবতের আলোকে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের প্রকারভেদ দেখানো হল মহাবিশ্বের ব বিশ্বব্রহ্মান্ডের সম্প্রসারণ ২ ভাবে হয়ঃ-
১) বিশ্বব্রহ্মান্ডের সম্প্রসারণ
২) ব্রহ্মান্ডের সম্প্রসারণ
বিশ্বব্রহ্মান্ডের সম্প্রসারণ আবার ২ ভাবে হয়
ক) ব্রহ্মান্ডের আয়তনের সম্প্রসারণ
খ) বিশ্বব্রহ্মান্ডের আবরনের সম্প্রসারণ এখা নে ব্রহ্মান্ডের আয়তনের সম্প্রসারণ থেকে মহাশূন্যে ব্রহ্মান্ডপুঞ্জ বা ছায়াপথের সম্প্রসারণ হয় ।
আবার ব্রহ্মান্ডের সম্প্রসারণ ২ ভাবে হয়
১) বিশ্বব্রহ্মান্ডের গোলকের সম্প্রসারণ এখানে বিশ্বব্রহ্মান্ডের গোলকের সম্প্রসারণ থেকে ব্রহ্মান্ডের ভিতরে গ্রহ নক্ষত্রের সম্প্রসারণ
২) বিশ্বব্রহ্মান্ডের আবরণের সম্প্রসারণ
আমরা আজকে আলোচনা করব ব্রহ্মান্ডের সম্প্রসারণ ব্রহ্মান্ডের সম্প্রসারণ (𝔼𝕩𝕡𝕒𝕟𝕤𝕚𝕠𝕟 𝕠𝕗 𝕌𝕟𝕚𝕧𝕖𝕣𝕤𝕖)
১) ব্রহ্মান্ডের গোলকের সম্প্রসারণ ব্রহ্মান্ডগুলি কারণ সমুদ্রের জলে বুদবুদের আকারে সৃষ্টি হয় । পরবর্তীতে এই বুদবুদের মধ্যে ভগবানের একটি শক্তি প্রবেশ করে, ইহার নাম গর্ভোদক শক্তি, বুদবুদ রূপ ব্রহ্মান্ডের মধ্যে যখন শক্তি প্রবেশ করে তখন ব্রহ্মান্ড সম্প্রসারিত হয়ে নিজস্ব আকার ধারণ করে । এই সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া কারণ সমুদ্রে হয় এবং এর জন্য্ কোটি কোটি বছর সময় লাগে । ব্রহ্মান্ডের ভিতরে গ্রহ নক্ষত্রের সম্প্রসারণ (𝔼𝕩𝕡𝕒𝕟𝕤𝕚𝕠𝕟 𝕠𝕗 ℙ𝕝𝕒𝕟𝕖𝕥𝕤 𝕚𝕟 𝕌𝕟𝕚𝕧𝕖𝕣𝕤𝕖) প্রতিটি বুদবুদের মধ্যে একটি করে ব্রহ্মান্ড সৃষ্টি হয় । প্রতিটি ব্রহ্মান্ডের আয়তন ভিন্ন রকমের যেমন আমরা যে ব্রহ্মান্ডে বাস করি এর মধ্যের আয়তন ৫০ কোটি যোজন বা ৪০০ কোটি মাইল । এভাবে প্রতিটি বুদবুদের মধ্যে নির্দিষ্ট আয়তনের ব্রহ্মান্ড সৃষ্টি হয় । এই নির্দিষ্ট জায়গা সৃষ্টির জন্য বুদবুদ বা ব্রহ্মান্ডগুলির সম্প্রসারণ হতে হয় । প্রতিটি ব্রহ্মান্ডের মধ্যে অসংখ্য গ্রহ, নক্ষত্র তৈরী হয় সেগুলি সম্প্রসারিত হয়ে নির্দিষ্ট কক্ষপথে অবস্থান নেয়, এভাবে ব্রহ্মান্ডের ভিতরে সম্প্রসারণ ঘটে থাকে ।
২) ব্রহ্মান্ডের আবরণের সম্প্রসারণ ( 𝔼𝕩𝕡𝕒𝕟𝕤𝕚𝕠𝕟 𝕠𝕗 𝕥𝕙𝕖 𝕔𝕠𝕧𝕖𝕣𝕚𝕟𝕘 𝕠𝕗 𝕌𝕟𝕚𝕧𝕖𝕣𝕤𝕖) আমি ব্রহ্মান্ড আলোচনা পর্বে ব্রহ্মান্ডের আবরণ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছি । প্রতিটি ব্রহ্মান্ড গোলক ৭ টি আবরণ দ্বারা আবৃত, প্রতিটি আবরণ পূর্বটি অপেক্ষা ১০ গুণ অধিক চওড়া । ব্রহ্মান্ডের আবরণের বর্ণনা
তদন্ডং বিশেষাখ্যং ক্রমবৃদ্ধৈর্দশোত্তরৈঃ ।
তোয়াদিভিঃ পরিবৃতং প্রধানেনাবৃতৈর্বহিঃ যত্রলোকবিতানোহয়ং রূপং ভগবতো হরেঃ (ভাগবত ৩/২৬/৫২)
অনুবাদ এই ব্রহ্মান্ডকে বলা হয় জড়া প্রকৃতির প্রকাশ তাহাতে জল, অগ্নি, বায়ু, আকাশ, অহংকার এবং মহত্তত্ত্বের যে আবরণ রহিয়াছে, তাহা ক্রমান্বয়ে পূর্বটির থেকে পরবর্তী আবরণটি দশ গুণ অধিক এবং তাহার শেষ আবরণটি হইতেছে প্রধানের আবরণ । এই ব্রহ্মান্ডে ভগবানের বিরাটরূপ বিরাজ করিতেছে, যাহার দেহের একটি অংশ হইতেছে চতুর্দশ ভুবন । এই শ্লোকে ব্রহ্মান্ডের ৭ টি আবরণের নাম ও কোনটি কি পদার্থ দ্বারা তৈরী সেটা বর্ণনা করা হয়েছে । এভাবে ব্রহ্মান্ডের আবরণগুলি প্রথম আবরণ থেকে ৭ম আবরণ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে সম্প্রসারিত হতে থাকে । এই সম্প্রসারণের জন্য লক্ষ লক্ষ বছর সময় লাগে । এখানে প্রথম ৪ টি আবরণ জল, আগুন, বায়ু, আকাশ এগুলি সম্বন্ধে বিজ্ঞানীদের ধারণা আছে কিন্তু পরের অহংকার, মহতত্ত্ব, প্রধান এই তিনটি আবরণ সম্বন্ধে বিজ্ঞানীদের কোন ধারনা নাই, বিজ্ঞানীরা আকাশ বা ইথারকে সবচেয়ে সূক্ষ্ম পদার্থ হিসাবে বিবেচনা করছে । কিন্তু ভাগবত বলছে আরো সূক্ষ্মতম পদার্থ রয়েছে যেমন অহংকার, মহতত্ত্ব ও প্রধান । এগুলি এতো সূক্ষ্ম যে সাধারন বিজ্ঞান দিয়ে এগুলি উপলব্ধি করা যায় না । সেজন্য আকাশ, অহংকার, মহতত্ত্ব, প্রধানকে সাধারন বিবেচনায় শূন্যস্থান বলা যেতে পারে । আমাদের ব্রহ্মান্ডের আবরনের পর শূন্যস্থানের পরিমাণ আকাশ = ১০০০০ 𝕏 যোজন অহংকার = ১০০০০০ 𝕏 যোজন মহতত্ত্ব = ১০০০০০০ 𝕏 যোজন প্রধান = ১০০০০০০০ 𝕏 যোজন মোট = ১১১১০০০০𝕏 যোজন বা ১১১১০০০০ × ৫০ কোটি যোজন [আমাদের ব্রহ্মান্ডের ব্যাস = ৫০ কোটি যোজন] বা ১১১১০০০০ × ৫০ × ৮ কোটি মাইল [১ যোজন=৮ মাইল] বা ৬৮২৫ আলোকবর্ষ (মোটামুটি) সুতরাং বলা যেতে পারে আমাদের ব্রহ্মান্ডের আবরণের পর শূন্যস্থানের পরিমাণ প্রায় ৬৮২৫ আলোক বর্ষ । এ হিসাব থেকে বলা যেতে পারে বিজ্ঞানীরা দুটি ব্রহ্মান্ড বা নীহারিকার মধ্যবর্তী যে বিশাল ফাঁকা জায়গা দেখতে পাচ্ছেন সেই ফাঁকা জায়গায় উৎস এই বিষয়টি, এভাবে ব্রহ্মান্ডের আবরণগুলি যখন সম্প্রসারিত হয়ে পূর্ণাঙ্গ ব্রহ্মান্ডের রূপ ধারণ করে তখন ব্রহ্মান্ডগুলি কারণ সমুদ্রে ভাসতে থাকে । অর্থাৎ ব্রহ্মান্ডগুলি পানির তুলনায় হালকা হয়ে যায় এবং ইহা মহাশূন্যে ভাসমান হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে । পরবর্তী পোষ্টে বিশ্বব্রহ্মান্ড বা মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করা হবে । বিশ্বব্রহ্মান্ড বা মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ (𝔼𝕩𝕡𝕒𝕟𝕤𝕚𝕠𝕟 𝕠𝕗 𝕨𝕙𝕠𝕝𝕖 𝕌𝕟𝕚𝕧𝕖𝕣𝕤𝕖)
১) বিশ্বব্রহ্মান্ডের আয়তনের সম্প্রসারণ ভাগবতে বর্ণনা করা হয়েছে চিন্ময় জগতের নীচে জড় জগত বা মহাবিশ্ব অবস্থিত । যখন জড় জগত সৃষ্টির সময় হয় তখন কৃষ্ণ গোলক বৃন্দাবন থেকে সৃষ্টির পরিকল্পনা করেন । সেজন্য চিন্ময় জগতের নীচে একটি গোলাকার বল তৈরী হয়, ইহা মহাবিশ্বের গোলক । এ গোলক কোটি কোটি বছর ধরে সম্প্রসারিত হয়ে মহাবিশ্বের গোলকে পরিণত হয়, এর মধ্যে অনন্ত কোটি ব্রহ্মান্ড সৃষ্টি হয় ।
২) মহাশূন্যে ব্রহ্মান্ডপুঞ্জ বা ছায়া পথের সম্প্রসারণ ( 𝔼𝕩𝕡𝕒𝕟𝕤𝕚𝕠𝕟 𝕠𝕗 𝕌𝕟𝕚𝕧𝕖𝕣𝕤𝕖 𝕚𝕟 𝕥𝕙𝕖 𝕤𝕡𝕒𝕔𝕖 𝕠𝕗 𝕌𝕟𝕚𝕧𝕖𝕣𝕤𝕒𝕝 𝕘𝕝𝕠𝕓𝕖) ব্রহ্মান্ডপুঞ্জের সম্প্রসারণ ( 𝔼𝕩𝕡𝕒𝕟𝕤𝕚𝕠𝕟 𝕠𝕗 𝕄𝕚𝕝𝕜𝕪 𝕎𝕒𝕪) আমরা আগের আলোচনা দেখেছি ব্রহ্মান্ডগুলি কারণ সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায় অবস্থান করছে অর্থাৎ ব্রহ্মান্ডগুলি পানির থেকে হালকা রূপ ধারণ করে । এ অবস্থায় ব্রহ্মান্ডগুলি কারণ সমুদ্রের জলে ঝাঁকে ঝাঁকে অবস্থান করে অর্থাৎ এক জায়গায় অনেকগুলো ব্রহ্মান্ড আঙ্গুর ফলের মতো থোকা বাধিঁয়া থাকে । যখন কারণ সমুদ্রে অবস্থিত মহাবিষ্ণু শ্বাস ত্যাগ করেন তখন সবগুলি ব্রহ্মান্ড কারণ সমুদ্রে থেকে উথিত হতে শুরু করে মহাশূন্যে নিজেদের অবস্থান দখল করে এই ব্রহ্মান্ডপুঞ্জকে বিজ্ঞানীরা ছায়াপথ বা 𝕄𝕚𝕝𝕜𝕪 𝕎𝕒𝕪 বলছেন । ভাগবত অনুসারে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ শুরু হয়েছে = ১৫৫৫২০১৯৬০৮৫৩০৯৮ বছর আগে । ভাগবতে বর্ণনা করা হয়েছে মহাবিশ্বের আয়ু = ৩১১০৪০০০০০০০০০০০ বছর বা ৩১১০৪০০০ কোটি বছর । এ সময়ের পর মহাবিশ্ব সর্বতভাবে ধ্বংশ হয়ে যাবে একে মহাপ্রলয় বলে । মহাবিশ্বের আয়ু ২ টি পর্বে বিভক্ত ১ম অর্ধ এবং ২য় অর্ধ, প্রথম অর্ধ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে আমরা এখন ২য় অর্ধে বসবাস করছি । এ বিষয়টি গত ২৩/১০/২০০২ ইং তারিখে ‘দৈনিক ইত্তেফাক’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে । খবরে উল্লেখ করা হয়েছে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি অধ্যাপক আন্দ্রেই লিনদ ও তাঁহার স্ত্রী রেনেটা কালোশ বলেছেন, এতোদিন ধারনা করা হতো মহাবিশ্ব বয়সে তরুণ কিন্তু সেটা সঠিক নয় । তারা উল্লেখ করেছেন মহাবিশ্ব মাঝ বয়স অতিক্রম করিয়াছে । তারা আরো বলেছেন যেমনটি ধারনা করা হতো তার আরও আগে মহাবিশ্ব ধ্বংশ হয়ে যাবে । তাদের এই ধারণা ভাগবতের আলোকে সঠিক । ভাগবতে আরো বর্ননা করা হয়েছে মহাবিশ্বের জীবনীতে দিনের সংখ্যা ৩৬০০০ । বর্তমান আমরা ১৮০০১ তম দিবসে বসবাস করছি । মহাবিশ্বেরর ১ দিন সমান আমাদের ৪৩২ কোটি বছর । মহাবিশ্বের জীবনী দুইটি পর্বে বিভক্তঃ প্রথম অর্ধ এবং ২য় অর্ধ, দুইটি পর্বের মিলনকে বলা হয় জীবনী সন্ধি বা ক্রান্তিলগ্ন বর্তমানে আমরা ক্রান্তিলগ্নে বসবাস করছি । ব্রহ্মার শতবর্ষ আয়ু দুই ভাগে বিভক্ত
যদর্ধমায়ুস্তস্য পরার্ধমভিধীয়তে ।
পূর্বঃ পরার্ধোহপক্রান্তো হ্যপরোহদ্য প্রবর্ততে ।। (ভাগবত ৩/১১/৩৪)
অনুবাদ ব্রহ্মার শতবর্ষ আয়ু দুভাগে বিভক্ত । তাঁহারা আয়ুর প্রথম অর্ধভাগ ইতিমধ্যেই গত হইয়াছে এবং দ্বিতীয়ার্ধ এখন চলিতেছে । এ শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে ব্রহ্মার আয়ু ১০০ বছর ইহা দুই ভাগে বিভক্ত প্রথম অর্ধ ইতিমধ্যে গত হয়েছে (অর্থাৎ ব্রহ্মার বয়স এখন ৫০ বছরের চেয়ে বেশি), এখন দ্বিতীয় অর্ধ চলছে । ব্রহ্মার আয়ুর ১ দিনকে মহাবিশ্বের ১ দিন হিসাবে ধরা হয় যাহা ৪৩২ কোটি বছর । অর্থাৎ ব্রহ্মার ১২ ঘন্টা = এই পৃথিবীর ৪৩২ কোটি বছরের সমান । এ হিসেবে ব্রহ্মা ১০০ বছর বাঁচে যা ৩১১০৪০০০,০০০০০০০০ বছরের সমান । ব্রহ্মার বয়সকে মহাবিশ্বের বয়স হিসেবে বিবেচনা করা হয় । পরবর্তী পোষ্টে বিগ ক্রাঞ্চ বা মহাসংকোচন নিয়ে আলোচনা করা হবে । এখানে আরেকটি পয়েন্ট আলোচনা করা হয় নাই তা হলো ‘বিশ্বব্রহ্মান্ডের গোলকের আবরণের সম্প্রসারণ’ এটা বিগ ক্রাঞ্চের পর আলোচনা করা হবে । মহাসংকোচন (𝔹𝕚𝕘 ℂ𝕣𝕦𝕟𝕔𝕙) ভাগবতে বর্ণনা করা হয়েছে, মহাবিশ্বের জীবনের প্রথম অর্ধ পর্যন্ত মহাবিশ্ব সম্প্রারণ হতে থাকে । এর পর শুরু হয় ক্রান্তিলগ্ন এ সময় মহাবিশ্বকে মোটামুটি স্থির বলা যায় । এর পর মহাবিশ্বের সংকোচন শুরু হয় যা দ্বিতীয় অর্ধ পর্যন্ত চলে । যদিও মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ শুরু হয়েছে ১৫৫৫২০১৯৬০৮৫৩০৯৮ বছর আগে কিন্তু প্রথম দিকে অত্যন্ত দ্রুত বেগে সম্প্রসারন হয়েছে এর পর সম্প্রসারনের হার ধীরে ধীরে কমতে কমতে এক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায়, তাকে ক্রান্তিলগ্ন বলে । বর্তমানে আমরা ক্রান্তিলগ্নে অবস্থান করছি অর্থাৎ মহাবিশ্বের সম্প্রসারন শেষ পর্যায়ে পৌছিয়ে, কিছুদিন পর ধীরে ধীরে সংকোচন শুরু হবে যা ১৫৫৫১৯৮০৩৯১৪৬৯০২ বছর ধরে চলবে । এই সময়ের পর মহাসংকোচনের মাধ্যমে সমস্ত ব্রহ্মান্ড কারণ সমুদ্রে বিলীন হয়ে যাবে একে বলা হয় মহাপ্রলয় বা মহাসংকোচন । বিজ্ঞানীরা একে 𝔹𝕚𝕘 ℂ𝕣𝕦𝕟𝕔𝕙 (বিগ ক্রাঞ্চ) বলে । মহাপ্রলয়ের পর মহাবিশ্বের গোলক ৩১১,০৪০০০০,০০০০০০০০ বছর অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকবে, একে মহাবিশ্বের মৃত অববসস্থা বলে । বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের এই অন্ধকার অবস্থাকে কৃষ্ণগহব (𝔹𝕝𝕒𝕔𝕜 ℍ𝕠𝕝𝕖) বলে । মহাবিশ্ব ৩১১,০৪০০০০,০০০০০০০০ বছর মৃত অবস্থায় থাকবার পর আবার জীবিত হয় অর্থাৎ পুণরায় মহাবিশ্বের সৃষ্টি শুরু হয় । মহাবিশ্ব সৃষ্টির পর ৩১১,০৪০০০০,০০০০০০০০ বছর অবস্থান করে আবার ধ্বংশ প্রাপ্ত হয়, ধ্বংস অবস্থার পর আবার সৃষ্টি হয় । এ ভাবে এ জড়জগতের সৃষ্টি, অবস্থান ও ধ্বংস শাশ্বত নিয়মে চলছেে এক অর্থে এর কোন শুরু বা শেষ নাই । কারণ সমুদ্র বিজ্ঞানীদের ধারনা এই মহাবিশ্ব একসময় কৃষ্ণ গহবরে বিলীন হয়ে যাবে, একে তারা বিগ ক্রাঞ্চ (𝔹𝕚𝕘 ℂ𝕣𝕦𝕟𝕔𝕙) বলে । ভাগবতে উল্লেখিত কারণ সমুদ্রকে বিজ্ঞানীদের কৃষ্ণ গহবরের সাথে তুলনা করা যায় । কেননা এই মহাবিশ্ব এক সময় কারণ সমুদ্রে ধ্বংস হয়ে যাবে । সুতরাং সিধান্ত করা যায়, ভাগবতের কারণ সমুদ্রকে বিজ্ঞানীরা কৃষ্ণ গহবর হিসেবে মনে করছেন । বিশ্বব্রহ্মান্ড কারণ সমুদ্রে অবস্থিত মহাবিষ্ণুতে বিলীন হওয়াকে বিজ্ঞানীরা 𝔹𝕚𝕘 ℂ𝕣𝕦𝕟𝕔𝕙 (বিগ ক্রাঞ্চ) বলেন।
স এষ আদ্যঃ পুরুষঃ কল্পে কল্পে সৃজত্যজঃ ।
আত্মাত্মন্যাত্মনাত্মানং স সংযচ্ছিতি পাতি চ ।। (ভাগবত ২/৬/৩৯)
অনুবাদ সেই আদিপুরুষ পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মরহিত হওয়া সত্ত্বেও প্রথম অবতার মহাবিষ্ণু রূপে নিজেকে বিস্তার করিয়া এই ব্যক্ত জগতের সৃষ্টি করেন । তাঁহার মধ্যেই অবশ্য সৃষ্টি প্রকাশিত হয় এবং জড় পদার্থ ও জড় অভিব্যক্তি সবই তিনি স্বয়ং । কিছুকালের জন্য তিনি তাহাদের পালন করেন এবং তারপর তিনি পুনরায় তাহাদের আত্মসাৎ করিয়া নেন । এ শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে মহাবিষ্ণু থেকে জগতসমূহ সৃষ্টি হচ্ছে, তিনি কিছুদিন পালন করেন তারপর আবার মহাবিশ্ব আত্মসাৎ কর নেন । মহাবিশ্বের আত্মসাৎ হওয়াকে বিজ্ঞানীরা 𝔹𝕚𝕘 ℂ𝕣𝕦𝕟𝕔𝕙 (বিগ ক্রাঞ্চ) বলে থাকেন । জড় জগতের সৃষ্টি ও ধ্বংস চক্রকারে চলছে
সর্বভূতানি কৌন্তেয় প্রকৃতিং যান্তি মামিকাম্ ।
কল্পক্ষয়ে পুনস্তানৌ কল্পানি কল্পাদৌ বিসৃাম্যহম্ ।।
প্রকৃতিং স্বামবষ্টভ্য বিসৃজামি পুণঃ পুণঃ ।
ভুতগ্রামমিমং কৃৎস্নমবশং প্রকৃতের্বশাৎ ।। (গীতা ৯/৭-৮)
অনুবাদ কল্পান্তে সম্পূর্ণ সৃষ্টি, যথা জড় জগত এবং প্র্রকৃতিতে ক্লেশ প্রাপ্ত জীব আমার দিব্য দেহে লয় প্রাপ্ত হয় এবং নতুন কল্পের আরম্ভে আমার ইচ্ছার প্রভাবে তাহারা পুণরায় প্রকাশিত হয় । এভাবে প্রকৃতি আমার নিয়ন্ত্রনে পরিচালিত হয় । আমার ইচছার প্রভাবে তা পুণঃপুণঃ প্রকট হয় এবং লয় হয় । এ শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে এ জগত পুনঃপুনঃ সৃষ্টি ও ধ্বংস হচ্ছে ।
জড় জগত
শাশ্বত যথেদানীং তথাগ্র্রে চ পশ্চাদপ্যেতদীদৃশম্ (ভাগবত ৩/১০/১৩)
অনুবাদ এ জড় সৃষ্টি এখন যেমন আছে, পূবেও তেমনই ছিল এবং ভবিষ্যতেও তেমনই থাকবে । এ শ্লোকে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, এই জগত শাশ্বত এখন আছে অতীতে ছিল এবং ভবিষ্যতে থাকবে । ভাগবতে বর্ণনা করা হয়েছে, মহাবিশ্বের সম্প্রসারন একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত হবে যখন ব্রহ্মান্ডগুলি স্ব স্ব স্থান দখল করবে তখন সম্প্রসারন বন্ধ হয়ে যায় এবং মহাবিশ্বের সম্প্রসারন অসীম পর্যায়ে হয় না, কারন মহাবিশ্ব একটি গোলকের মধ্যে অবস্থিত এবং এর আবরন রয়েছে । পরবর্তী পোষ্টে বিশ্বব্রহ্মান্ডের গোলকের আবরণের সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করা হবে । বিশ্বব্রহ্মান্ডের গোলকের আবরণের সম্প্রসারণ (𝔼𝕩𝕡𝕒𝕟𝕤𝕚𝕠𝕟 𝕠𝕗 𝕥𝕙𝕖 𝕃𝕒𝕪𝕖𝕣 𝕠𝕗 𝕎𝕙𝕠𝕝𝕖 𝕌𝕟𝕚𝕧𝕖𝕣𝕤𝕒𝕝 𝔾𝕝𝕠𝕓𝕖) প্রতিটি ব্রহ্মান্ড একটি গোলকের মধ্যে অবস্থিত এবং আবরণ দ্বারা আবৃত থাকে । এর আবরণগুলি সম্প্রসারণ হয় ঠিক সেরকম এই বিশ্বব্রহ্মান্ড একটি গোলকের মধ্যে অবস্থিত, এই গোলকের মধ্যে অনন্তকোটি ব্রহ্মান্ড অবস্থিত তা হলে বিবেচনা করতে হবে মহাবিশ্বের গোলক কত বড় । এ বিষয়টি আমি পূর্বে আলোচনা করে প্রমান করেছি মহাবিশ্বের আয়তন অসীম । এ বিষয়টি সঠিক, আবার মহাবিশ্বের আয়তন অসীম নয় এটাও সঠিক । মহাবিশ্বের গোলকের ৭ টি আবরনের বর্ণনা
নভো দদাতি শ্বসতাং পদং যন্নিয়মাদদঃ লোকং স্বদেহং তনুতে মহান্ সপ্তভিরাবৃতম্ ।। (ভাগবত ৩/২৯/৪৩)
অনুবাদ পরমেশ্বর ভগবান নিয়ন্ত্রনে আকাশ অন্তরীক্ষে বিভিন্ন গ্রহদের স্থান প্রদান করে, যেখানে অসংখ্য প্রাণী বাস করে । তাঁহার পরম নিয়ন্ত্রনে সমগ্র ব্রহ্মান্ডের বিরাট শরীর সপ্ত আবরণসহ বিস্তৃত বিশ্বব্রহ্মান্ডের আবরণের ধারনা হয় । এ শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে সমগ্র ব্রহ্মান্ডের অসংখ্য গ্রহে অসংখ্য প্রাণী বাস করে এবং বিশ্বব্রহ্মান্ডের ৭ টি আবরণ আছে । আগে আমরা আলোচনা থেকে দেখেছি, ব্রহ্মান্ডের আবরণ এর ব্যাসের প্রায় ১ কোটি ১১ লক্ষ গুণ চওড়া ঠিক সেরকম মহাবিশ্বের গোলকের আবরণ এর ব্যাসের ১ কোটি ১১ লক্ষ গুণ চওড়া এবং এ আবরণগুলি স্তরে স্তরে সম্প্রসারিত হয়, যার জন্য লক্ষ কোটি বছর সময় লাগে । ভাগবতে বর্ণনা করা হয়েছে যদি কেউ মনের বেগে কোটি কোটি বছর ধরে বিশ্বব্রহ্মান্ডের আবরণ ভেদ করতে চাই, তা হলে তাহার পক্ষে সম্ভব নয় । আধুনিক বিজ্ঞানীরা আলোর গতিকে সবচেয়ে দ্রুতগামী হিসাবে আবিষ্কার করেছেন, কিন্তু বৈদিক শাস্ত্র আলোর গতির চেয়ে দ্রুতগামী রথ বা মহাশূন্য যান তৈরী করতে পারতেন যেগুলি মনের গতিতে চলে । আলোর চেয়ে দ্রুতগামী মহাশূন্য যান সৃষ্টি
যো বামশ্বিনা মনসো জবীয়ান্রথঃ স্বশো বিশ আজিগতি ।
যেন গচ্ছথঃ সুকৃতো দূরোণং তেন নরা বতিরস্মভ্যং যাতৃম ।। (ঋকবেদ ১/১১৭/২)
অনুবাদ হে অশ্বিদ্বয় ! তোমাদের মনের অপেক্ষাও বেগবান ও শোভনীয় যে অশ্বযুক্ত রথ সম প্রজাবর্গের সম্মূখে গমন করে এবং যে রথে তোমরা শুভ কর্মা লোকের গৃহে গমন কর, হে নুতুদ্বয় ! সে রথে আমাদের গৃহে এস । ঋক বেদের এই শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে, মনের গতির মত গতি সম্পন্ন মহাশূন্য যান তৈরী সম্ভব ।
আইনষ্টাইন-এর বিখ্যাত সমীকরণ 𝔼 = 𝕞𝕔² এ সূত্র অনুসারে কোন বস্তুর গতি যদি আলোর গতির সমান হয়, তবে ঐ বস্তুর ভর অসীম হবে, অসীম ভরের বস্তুর জন্য অসীম শক্তির প্রয়োজন সেটা সম্ভব নয়, তাই বিজ্ঞানীদের ধারণা আলোকের চেয়ে দ্রুত কোন কিছুর গতি হতে পারে না কিন্তু বৈদিক শাস্ত্রে এ জগত ভিন্ন আর একটি জগতের বর্ণনা আছে, সে জগতের নাম চিন্ময় জগত বা বিপরীত জগত । আমি আলোচনা করেছি বিপরীত জগত আমাদের জগতের নীতিমালা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না, সেখানকার নীতিমালা আলাদা সেজন্য আমাদের জগতে যা সম্ভব নয় তা চিন্ময় জগতে সম্ভব হতে পারে । আমরা বিশ্বব্রহ্মান্ডের এ সকল আলোচনা থেকে উপলব্ধি করতে পেরেছি বুদবুদ তত্ত্বের মাধ্যমে মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছে । এর পর মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ ঘটেছে এবং পরিশেষে মহাসংকোচন (𝔹𝕚𝕘 ℂ𝕣𝕦𝕟𝕔𝕙) এর মাধ্যমে মহাবিশ্বের ধ্বংস হবে । সুতরাং বুদবুদ তত্ত্ব (𝔹𝕦𝕓𝕓𝕝𝕖 𝕋𝕙𝕖𝕠𝕣𝕪) এবং মহাসংকোচন (𝔹𝕚𝕘 ℂ𝕣𝕦𝕟𝕔𝕙) এ দুটি তত্ত্ব মহাবিশ্বের সৃষ্টি ও ধ্বংসের জন্য প্রযোজ্য । এ তত্ত্বগুলি ব্রহ্মান্ডের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় । প্রতিটি বুদবুদের মধ্যে একটি করে ব্রহ্মান্ড সৃষ্টি হয় মহাবিষ্ফোরণ (𝔹𝕚𝕘 𝔹𝕒𝕟𝕘) তত্ত্বের মাধ্যমে যা পরবর্তীতে আলোচনা করা হবে । বিজ্ঞানীরা ব্রহ্মান্ড এবং বিশ্বব্রহ্মান্ডের মধ্যে সুষ্পষ্ট পার্থক্য নির্ণয় করতে পারেন নাই সেজন্য তাঁরা সকল তত্ত্বকে মহাবিশ্ব সৃষ্টির প্রণালী হিসাবে বর্ণনা করবার চেষ্টা করছেন এর ফলে তত্ত্বগুলি পরস্পর বিরোধী হিসেবে দেখা দিচ্ছে কিন্তু ভাগবত সে সমস্যার সমাধান করে সবগুলি তত্ত্বের মধ্যে ঐক্য স্থাপন করেছে, যা বিজ্ঞানী হকিং এর আকুল আবেদন ।
বিশ্বব্রহ্মান্ড বা মহাবিশ্ব আলোচনার সারাংশ (𝔸 𝔹𝕣𝕚𝕖𝕗 𝔻𝕚𝕤𝕔𝕦𝕤𝕤𝕚𝕠𝕟 𝕒𝕓𝕠𝕦𝕥 𝕎𝕙𝕠𝕝𝕖 𝕌𝕟𝕚𝕧𝕖𝕣𝕤𝕖)
১) মহাবিশ্ব একটি যা গোলাকার আবরণ দ্বারা আবৃত ।
২) মহাবিশ্বের গোলকের অর্ধেক চিন্ময়জল বা বিপরীত পদার্থ দ্বারা পূর্ণ, এর নাম কারণ সমুদ্র ।
৩) মহাবিশ্বর আয়তন অচিন্ত্য অর্থাৎ একটি বিচারে অসীম এবং অন্য বিচারে অসীম নয় ।
৪) কারণ সমুদ্রে বুদবুদের আকারে ব্রহ্মান্ডগুলি সৃষ্টি হয়েছে, একে বিজ্ঞানীরা বুদবুদ তত্ত্ব বলে ।
৫) প্রতিটি বুদবুদের মধ্যে গর্ভোদকশক্তি প্রবেশ করে একে পূর্ণাঙ্গ ব্রহ্মান্ডে প্রকাশ করে ।
৬) গর্ভোদক শক্তি দুই ভাগে বিভক্ত হয় অনন্ত শক্তি ও পরমাণু শক্তি ।
৭) অনন্ত শক্তির দ্বারা গ্রহ নক্ষত্র মহাশূন্য ভাসমান থাকে এবং নিজস্ব কক্ষপথে ভ্রমণ করে । অনন্তশক্তির অপর নাম সংকর্ষশক্তি । এ নামের সাথে বিজ্ঞানীদের মাধ্যাকর্ষণ নামের মিল আছে ।
৮) পরমাণুশক্তি পরমাণুতে প্রবেশ করে পরমাণুর গঠন ঠিক রাখে এবং পরমাণুকে কার্যশীল করে ।
৯) মহাবিশ্বের সম্প্রসারন ৮ টি ধাপে সম্পূর্ণ হয় ।
১০) কারণ সমুদ্রে বুদবুদের মাধ্যমে ১৫৫৫২০১৯৬০৮৫৩০৯৮ বছর আগে মহাবিশ্বের শুরু হয়েছে, একে বিজ্ঞানীরা বুদবুদ তত্ত্ব বলে ।
১১) মহাসংকোচনের মাধ্যমে ১৫৫৫২০১৯৬০৮৫৩০৯৮ বছর পর মহাবিশ্ব ধ্বংশ হবে একে মহহাপ্রলয় বা বিগ ক্রাঞ্চ বলে ।
১২) বুদবুদ তত্ত্ব (𝔹𝕦𝕓𝕓𝕝𝕖 𝕋𝕙𝕖𝕠𝕣𝕪) এবং মহাসংকোচন তত্ত্ব (𝔹𝕚𝕘 ℂ𝕣𝕦𝕟𝕔𝕙 𝕋𝕙𝕖𝕠𝕣𝕪) দুইটি বিশ্বব্রহ্মান্ডের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কিন্তু ব্রহ্মান্ডের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নহে ।
১৩) আলোর গতির চেয়ে দ্রুতগামী মহাশূন্য যান বৈদিক শাস্ত্রে বর্ণিত আছে যেটা মনের গতিতে চলে ।
১৪) কারণ সমুদ্রকে বিজ্ঞানীরা সবচেয়ে বড় ব্লাকহোল (𝔹𝕝𝕒𝕔𝕜 ℍ𝕠𝕝𝕖) মনে করছেন যাহাতে এই মহাবিশ্ব ধ্বংস হবে ।
১৫) মহাবিশ্ব ধ্বংসের পর মহাবিশ্বের গোলকের উপরের অর্ধেক ফাঁকা জায়গা অন্ধকারে পরিণত হয় একে কৃষ্ণ গহবর (𝔹𝕝𝕒𝕔𝕜 ℍ𝕠𝕝𝕖) বলা যেতে পারে । পরবর্তী পোষ্টে ভাগবতের আলোকে ব্রহ্মান্ড সৃষ্টি রহস্য আলোচনা করা হবে । (চলবে……..
0 Response to "৪.ভাগবতের আলোকে মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য -পর্ব ০৪"
Post a Comment