প্রশ্নের উত্তরপ্রারমার্থিক
প্রশ্ন ১১। এই বিশ্ব সংসার জাে ভগবানের সৃষ্টি। তিনি তাে সকলের মঙ্গলের চিন্তা করেন, তবে তাঁর সংসারে কেউ চোর কেউ সাধু, কেউ ধনী, কেউ গরিব-এর কারণ কি? উত্তর: ভগবান আমাদের দিয়েছেন স্বতন্ত্র ইচ্ছা শক্তি। সেই ইচ্ছাশক্তি অনুসারে আমরা প্রশ্ন করছি। আর সেই কর্মের ফলে সুখ অথবা দুঃখ ভোগ করছি। স্বতন্ত্র ইচ্ছাশক্তির সয়া বহণ কর্ণে আমরা সুন্দর হতে পালি, আবার অল ইচ্ছায় চরিত্র হতে পারি। বিশ্ব সংসারে স্থিত জীব তার নিজ নিজ ইচ্ছা অনুসারে কর্ম করছে এবং তার ভাল ব ম ফল ভােগ করছে। | বাধ্য করে যেমন ভালবাসা হয় না, মনের ইচ্ছা থেকেই লোকে ভালবাসে, তেমনই ভগবান সবাইকেই সঠিক পথে পরিচালিত করতে থাকলে স্বতন্ত্র ইহার মুও থাকে না। তখন কর্মের মূল মর্যাদা বা মাহাত্ম্য বলে কিছু থাকত না। যেমন আলে ও অংক আছে বলেই আলাের মহিমা ওঁ আহকারের দুঃথ উপলব্ধ হচ্ছে। বৈচিত্রময়। কর্ম ও কর্মবিল যদি না থাকত তবে তাে লােকে কর্ম করা থেকে ত্রিত হয়ে বসে থাত, অথবা এটা কি যায়ের মতো ভাবে নির্দেশে চলত। কিন্তু নিছক যুগ মতে কম টা আবি। তাই, হয় ভাল কিছু করে ভাল ফল পেতে হবে, নতুবা চক্ষ কিছু করে নদ যা পেতে হবে। এই বৈচিত্রের মধ্যেই প্রকৃত সুখের সন্ধান করতে
প্রশ্ন ১২। আমরা জানি সমুদ্র পৃথিবীর মধ্যেই আছে। অথচ শাস্ত্রে বলা হমেছে ভগবান বিষ্ণু বহ রূপ ধারণ করে এই পৃথিবীকে সমুদ্র থেকে উত্তোলন করলেন। এর রহস্যটা কি?
উত্তরঃ আমরা যে ব্রহ্মাণ্ডে বাস করছি তা হচ্ছে, চৌদ্দ ভূকম বিশিষ্ট। তার মধ্যে মাঝখানের একটি গ্রহ হচ্ছে এই পৃথিবী। ব্রহ্মাণ্ডের তলদেশে রয়েছে গর্ভেক সমুদ্র। সেই সমুদ্রে শায়িত গর্ভোদকশায়ী বিষ্ণু ৰাতিপক্স থেকে প্রজাসুস্টিকাৰী তৰক্ষার জন্ম। সেই গর্ভোদক সমুদ্র থেকে পৃথিবীকে শ্রীবরাহুদেব উত্তােলন করছিলেন। পৃথিবীর যথার্থ অবস্থান থেকে তি করে অসুর হিরণ পৃথিবীকে গর্ভোদক সমুদ্রে ডুবিয়ে রেখে ছিল। পৃথিবীতে যে অতি নগণ্য সমূত্র আছে, সেই সমূদ্রের কথা বলা হচ্ছে না।
প্রশ্ন ১৩। ভগবান সর্বশক্তিমান। ইচ্ছা মাত্রেই সব কিছু করতে পারেন। কলিযুগে প্রতিনিয়ত অন্যায় হিংসা প্রতারণা হানাহানি চলছে। তিনি তাে ইচ্ছা কালে এসব পাপকর্ম থেকে মানুষকে বিরত কৰে জগতের মঙ্গল বিধানে প্রত্যক্ষ ভূমিকা নিতে পারেন। কিন্তু নিচ্ছে না কেন? তাহলে কি এই জগতে দুর্বিষহ পরিস্থিতিটা তারই ইচ্ছা প্রকাশ?
উত্তর : আম এই তে এসে পড়েছি ভগবানের সেবা বিমুখ মনােভায় নেওয়ার ল। এটিই শাস্ত্রে বলা হয়েছে। ভগবান আমাদের স্ব স্বাধীন দিয়েছেন, যাতে আমবা ভাল হয়ে তাঁর কাছে ফিরে যেতে পারি, কিংবা এই জগতে থেকে অন্যায়। অবিচারও করতে পারি। প্রকৃতপক্ষে এই জাতের অধিকাংশ মানুই জড় জগৎটাকে ভালবাসতে চায়। অনেকে তটা ভালবাসতে চায় না। খণ্ডৰ শিখহ পরিস্থিতিটাই তো আমরা পেতে কয়েছি, না হলে আমরা সবাই ভক্ত হওয়ার অনা তৈরি হতাম। লােকর কর্মশীল হতে চায় না। ধর্ম হচ্ছে ভগবানের দেওয়া আইন। আইন লঙ্ঘন করে। আমরা স্বতন্ত্র ইহার অপব্যবহার করতেই পছন্দ করি। অতএর পরিণামে শাক্তি দুর্ভোগ ওয়াটাই আমাদের উচিত। নতুবা শিক্ষা হবে না। অতএব উচিত শিক্ষ পাওয়ার জন্য। আমাদের এখানে দুর্বিষহ পরিস্থিতি বজায় থাকুকটি গানের ইচ্ছা। যদি আমরা প্রধানকেই পেতে চাই, তবে তিনি আমাদের সোপ বৃদ্ধি দন বলে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু এই দুঃখময় জশাটার পরিবর্তন সান ভগবান প্রত্যক্ষভাবে করে দিন তার ফলে আমরা সব জশাবালী সুরৰে অটখাট মেরে
কৰ—একম কল্পনা করা ঠিক নয়। কেননা তাহলে তো সুন্দর ঝ মঙ্গলের মর্যাদা কেষ্ট দেবে না। পাণ্ডব আর কেীরব যদি এক হয়ে যায়, কিংবা আঠালাে দিনের মহাকাশতের যুদ্ধ একদিনেই শেষ হয়ে তহলে সে আর মহাভারতের মূল মংলা থাকত না। চৌদ্দ বছরের বনবাস দুঃখ একদিনেই কিলাে সীতাহরণকারী ব্যাবণকে যান মুহূর্তের মধ্যেই নিহত কণা যেত তাহলে তো বাল্মিকীর মায়ণ রচনার কোন প্রয়ােজন পড়ে না। সেইভাবে এই জাতের কোন প্রয়ােজন পড়ে না। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা কেনদিন হবে না।
জীবাত্মা কোন অঙ্গক নয়। নিছক বস্ত্রের মতাে নয়। সে ক্ষের মনের মতো করে চলবার স্বাধীনতা চাইবে। যে পড়াশুনা করে পরীক্ষা দিল সে পাশ হল এবং যে সারা বহন থাকি নিয়ে ফেল কল সেও পাশ হয়ে যাক এই তম বিষম জগতে কেউ চায় না। যদি কেউ মজা করে, পরীক্ষাটাই তুলে দিয়ে সবাইকেই পাশ করিয়ে দেওয়া হােক, তাহলে পক্ষী বলে কথাটির মূল্য কেষ্ট দেবে না। পড়াশুনার কেন মর্যাদাও থাকবে না। এইভাবে শেষ পর্যন্ত্র এই জগৎসহ বাদেও মূল মনি কে দেবে না। একথা বুদ্ধিমান ব্যক্তি সহজেই হনঙ্গম করতে পারেন।
প্রশ্ন ১৪। সর্বলােকমহেশ্বর আনন্দময় পরমেশ্বর ভগবানের সৃষ্ট জগতে আনন্দ নেই কেন?
উত্তর: জগৎ যেপ হোক না কেন প্রকৃতপক্ষে সকলেই আনন্দে রয়েছে। আনন্দ যদি না থাকত তলে জীর এতকাল কিভাবে কতে পারে। জীব যদি জানত যে এই আগৎ দুঃখে ভরা তখন তা অবশ্যই বৈধূ জগতে যাওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাত। কিন্তু তারা এই জগত সুখ আনন্দে আছে, বসেই বৈকুণ্ঠ জগতে আওার উন্সেশ্যে হরিজন করেই না। আমরা জানি বিষ্ঠা কত নােংৰ বিষয়। তাতে আমাদের বিরক্তি ভাল হলেও বিষ্ঠাভােজী পােকাগুলি কিছুতেই বিষ্ঠা ছেড়ে চলে যেতে চাইবে না। কারণ বিষ্ঠা খেয়ে সে আনন্দ পাহে। লাইতর সামনে হাজার হাজার পােকা লাফি করছে।
তদের খুলে এনে দূরে নিক্ষেপ করলে আবার লাইটের কাছে হেয়ে আসে। লাইনের বঁচে বারে বারে ঠোকর খেয়ে মরে যাবে তবুও লাইট ছেড়ে যেতে চায় না। কারণ লাইটেই সে আনন্দ পাচ্ছে। আমাদের জড় দেহ কতই ব্যাধিগ্রস্ত হচ্ছে, বহু অসুবিধা হচ্ছে, তবুও সেহ স্থঞ্চতে মত কে চাইছি না। কারণ এই দেহে থেকেই আমরা আখ পেতে চাই। কত সু-জমার ঘরে আমরা ঘুরপাক খাচ্ছি। 'বু সেই সব অসুবিধাগুলি আমরা চিন্তা করি না। আমি যেরূপ 'আনন্দ চাই তাই ভগবান নিচ্ছেন। উত্তর আনন্দ পেতে চাইলে হয়তাে উড়ােজাহাজে চড়ার সৌভাগ্য না হলেও পরবর্তী জলে মশা হওয়ার সুযোগ পাঞ্জা যেতে পারে। প্রধান হয়ে আনন্দ পেতে চাইলে হয়তো এই সুয়ে সুযােগ না হলে হালেকা শরীর ধারণ করে প্রধানমন্ত্রীর গলির ভেতরে জীকন যাপন করার সুযােগ পাওয়া যেতে পারে। বড় বড় মাছ খাওয়ার আনন্দ পেতে চাইলে বা, সােপ, তিমি হওয়ার সুযােগ পাওয়া যাবে সন্দেহ নেই। অতএব এই জন্য এক প্রকার আনন্দ ভোগের জগৎ, বটে। | ভগবসেবা উন্মুখ মানসিকতা থাকলে বৈকুণ্ঠ জগতের আনন্দ পাওয়া যাবে। ভসেবা বিনু মানসিকতা থাকলে জড় জগতের আনন্দ পাওয়া যাবে। ভগবদ বিমুখতাই, ভগবানের নির্ধারিত এই দুঃখময় জগতে আমাদের পতিত হওয়ার কারণ বলে শয়ে নির্দেশিত হয়েছে। এখানে মাসুখ-আনন্দে সবাই হয়েছে। গাধা যতই গভীর লাথি খেয়ে মুখ ফোলাক না কেন তবুও সে গর্দী-সন্ধের আনন্দ পেতে চায়। চিন্ময় আনন্দ এবং ভড় আনন্দ দুটোই এই মনুষ্য জন্মে লাভ স্পা যায়। যেটাই আমরা চাই। প্রকৃতপক্ষে এই জগৎ দুঃখময়। দুঃথ দিয়ে তৈরি। দুঃখম হল কেন, সুখময় করে জগৎটা নির্মিত হল না কেন, এই রকম প্রশ্ন করাই অমূলক। ভগবান ঝলছেন জগৎটাই দুঃখময় কবেই গঠন করা হয়েছে। লতি মনুষ্য-শরীর লাভ করে জীব এই দুঃখময় ভৰগর উল্লীর্ণ হওয়ার উদ্দেশ্যে পরমার্থ সান্স করবে, হরিভজন করবে। এইভাবে জীন যাপন কতে বলতে একদিন দেহত্যাগ করে আলম জাতে উন্নীত হতে পারে।
ই এই জগৎ আসলে পরমার্থ সঞ্চন ক্ষেত্র। এই জীকটি বিমুক্তির পরপারে যাওয়ার পরম সুযোগ। দুঃখ থেকেই শিক্ষা হয়।
প্রশ্ন ১৫। আমৰা বহু আলােচনা করেও একটি সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি। প্রশ্নটি হল, বীজ না হলে গাছ হয় না, কিংবা গাছ না হলে বীজ হয় না। এখন গাছ আগে, না বীজ আগে ?
উওর: কোনও জিনিস সুট হল, তারপর বুদ্ধি পেল, তাপর পরিপূর্ণ হলএরকমটি চিন্ময় জগৎ বৈকুণ্ঠ জগতে নয়। চিন্ময় জগতে সবকিছু পরিপূর্ণ। বৈকুণ্ঠে একটি গাছকে বীজে ‘ধ্য নিয়ে আসতে হবে তার পর বড় হবে এমনটি নয়। চিন্ময় জগতে কল্পবৃক্ষ সম্পূর্ণ বৃক্ষই বিরাজ করে। সেখানে গাছই, আগে। আর এই জড় ব্রহ্মাণ্ডে সৃষ্টি, স্থিতি, নৃদ্ধি ও দাসে রয়েছে। বীজ থেকে গাছ অংকুরিত হয়, বড় হতে থাকে, তারপর একদিন সেই গাহও মৃত্যুমুখে পতিত হয়। তাই জড় জগতে বীজ আগে।
প্রশ্ন ১৬। ভগবানের সৃষ্টির জীবাত্মা কোনও সংখ্যা আছে না কি? যদি থাকে তবে কত কোটি অবশ্যই জানাবেন?
প্রশ্ন ১৬। ভগবানের সৃষ্টির জীবাত্মা কোনও সংখ্যা আছে না কি? যদি থাকে তবে কত কোটি অবশ্যই জানাবেন?
উত্তর: এক-একটি জীবাত্মা ভগৰূনের অতি সুক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম চেতন সত্তা বা চিকণা। কত কোটি চিৎকণা আছে—এরকম প্রশ্নটাই অবাস্ত। ভগবান চিন্ময়। তিনি অসীম ও অনন্ত। তার চিন্ময় অঙ্গ থেকে প্রকাশিত চিৎকণাও অনন্ত অগণিত। শাস্ত্রে বলা হয়েছে ব্রহ্মাণ্ড অনন্ত কোটি। জড় ব্রহ্মাণ্ড অনন্ত কোটি, চিং বৈকুণ্ঠও অনন্ত কোটি। অান্ত কোটি ব্রহ্মাণ্ডে অনন্ত কোটি কোটি জীবাত্মা এবং আনন্ত বৈকুণ্ঠে 'অনন্ত কোটি কোটি জীবা বিরাজ করছে। সূর্য থেকে উৎপন্ন সূর্যরশ্মিশা যেমন গণনার বিষয় নয়, তেমনই ভগবান থেকে সৃষ্ট জীবাত্মার সংখ্যাও অগণনীয়।
প্রজাপতি ব্রহ্মা এই জড় ব্রহ্মাণ্ডে পরমেশ্বর ভগবানের নির্দেশে জীবাত্মাদের জন্যে দেহ গঠন করেছে। যে জড় দেহ গ্রহণ বা আশ্রয় করে এই জড় ব্রহ্মাণ্ডে জীবাত্মা জীবন যাপন করবে, সেই দেহ হচ্ছে চুরাশি লক্ষ রকমের। বিষ্ণুপুরাণে বলা হয়েছে
জলজ নলক্ষাণি স্থাবর লক্ষাবিংশতি। কুয়াে রুখকাঃ পক্ষিণী দশলক্ষণ।
ত্রিংশগ্রুয়াণি পশবঃ চতুর্লক্ষাণি মনুষ্য a. অর্থাৎ, ৯ লক্ষ রকমের জলজপ্রাণী, ২০ লক্ষ রকমের বৃক্ষলতাদি, কৃমিকটি-দীসৃপ ইত্যাদি ১১ লক্ষ রকমের, পক্ষী ১০ লক্ষ রকমের, পশু ৩০ লক্ষ রকমের এবং মানুষ ৪ লক্ষ রকমের। এইভাবে মোট ৮৪ লক্ষ রকমের জীবযােন রয়েছে।
প্রশ্ন ১৭। কৃষ্ণকে পুরুষ বলা হয় কেন?
উত্তরঃ পূঃ হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান। তিনি একজন ব্যক্তি। তিনি নিরাকার নন। পুরুষ বলতে বােঝায় যিনি সমক্ত আয়ােজনের ভোক্তা। কৃষ্ণই সমগ্র বিশ্বের সম আয়ােজনের মূল ভোক্তা। তিনি তার আনন্দ বর্ধনের জন্যই অনন্ত কোটি মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছে। সমগ্র জীবজগৎ তার সেবক। তিনিই একমাত্র সেব্য। শস্ত্রে বলা হয়েছে জীবের স্বরুপ হয় নিত্য কৃষ্ণদাস। সেই কথা ভুলে জীব যখন নিজে পুরুষ বা ভােক্তা হওয়ার বাসনা করে তখনই দুঃখময় জড়ব্রহ্মাণ্ডে পতিত হয়। কিন্তু আসলে জীব হচ্ছে সবসময় প্রকৃতি। আর পুরু হচ্ছেন ভগবান কৃষ্ণ।
প্রশ্ন ১৮। গােলােক ধাম কোথায়?
উত্তর : বৈকুণ্ঠ-জগতের সমস্ত গ্রহলােকের উপরে।।
প্রশ্ন ১৯। চৈতন্য চরিতামৃত গ্রন্থে দেখলাম ১+১-১, ১-১-১। এর অর্থ কি?
উত্তর : পরমেশ্বর ভগবান চিরকালই পূর্ণ। কখনই শূন্য বা অপূর্ণ নন। কোনও পূর্ণ অংশ থেকে কিছু অংশ বাদ দিলে অবশিষ্ট অংশটি পরিমাণে হ্রাস পায়, আবার কিছু অংশ যুক্ত করলে পূর্বের তুলনায় অংশটি পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। এটি হচ্ছে জড় জগতের হিসাব। অর্থাৎ জড় জগতের হিসাবটি হল, ১+১=২, ১-১০ | কিন্তু তিখার উশিতে এরকম নয়। ভগবান স্বয়ং সম্পূর্ণ। তিনি এমন ব্যক্তি নন যে, তার বুদ্ধি ছিল না, তাই শিক্ষা দীক্ষা নিয়ে বুদ্ধি হয়েছে, আবার নানা সমস্যায় পড়ে তার বুদ্ধি কমে গেছে। তার শক্তি বৃদ্ধি বা হাস হচ্ছে। না, এরকম ভগবানের ক্ষেত্রে হয় না বলেই তাকে পূর্ণপুরুষ বলা হয়। তাঁর কখনও চ্যুতি হয় না, হ্রাস-বৃদ্ধি হয় না, তাই তাকে অত বলা হয়। চিন্ময় জগতে কোনও ঘাটতি বা অভাবের প্রাদুর্ভাব নেই। সেখানে যা বিদ্যমান তার সঙ্গে আরও অনেক কিছু যোগ করা যদি কখনও সম্ভব হয় ঙ্গে তার বুদ্ধি সমৃদ্ধি-ঘটল—এমন নয়। বা সেখান থেকে কিছু বাদ দিলে ঘাটতি হল এমন নয়। চিন্ময় সর্বদা পরমপূর্ণই থাকে। এটি চিন্ময় জগতের হিসাব। অর্থাৎ চিন্ময় জগতের হিসাবটি হল, ১+১=১, ১-১১। কখনই হ্রাস-বৃদ্ধি বা শূন্য হয় না। ঈশোপনিষদে প্রথমেই তাই পরমেশ্বর ভগবান সম্বন্ধে বলা হয়েছে
ওঁ পূণর্মদঃ পুণমিদং পূর্ণাং পূর্ণমুদতে।
পূণস্য পুর্ণাদায় পুর্ণমোবশিষ্যতে ॥ অর্থাৎ, “পরমেশ্বর ভগবান সর্বতােভাবে পূর্ণ। তিনি সম্পূর্ণভাবে পূর্ণ বলে এই দৃশ্যমান জগতের মতাে তার থেকে উদ্ভূত সবকিছুই সর্বতােভাবে পূর্ণ। যা কিছু পরমপূর্ণ থেকে উদ্ভূত হয়েছে, তা সবই পূর্ণ। কিন্তু যেহেতু তিনি হচ্ছেন পরম পূর্ণ, তাই তার থেকে অসংখ্য অখণ্ড ও পূর্ণ সত্তা বিনির্গত হলেও তিনি পূর্ণরূপেই অবশিষ্ট থাকেন।”
প্রশ্ন ২০। শুনেছি অসংখ্য বৈকুণ্ঠ গ্রহলােক রয়েছে। সেই গ্রহলােকগুলির নাম কি?
উত্তর: পুরুষােত্তমলােক, অচ্যুতলােক, ত্রিবিক্রমলােক, হৃষিকেলোক, কেশবলোক, অনিরুদ্ধলােক, মাধবলােক, প্রদ্যুম্নলােক, সঙ্কর্ষণলােক, শ্রীধরলোক, বাসুদেবলােক, অযোধ্যালােক, দ্বারকালােক ইত্যাদি অসংখা চিন্ময় গ্রহলােক রয়েছে।
0 Response to "প্রশ্নের উত্তর ...।।(২য় পর্ব)।। প্রশ্নের উত্তরপ্রারমার্থিক"
Post a Comment